ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

উখিয়ার জুম্মা পাড়ায় রাতের আধারে সরকারি পাহাড় কর্তনের মহোৎসব ! 

ফারুক  আহমদ , উখিয়া ::

উখিয়ার জালিয়া পালংয়ের জুম্মাপাড়া একের পর এক সরকারি পাহাড় কর্তনের মহোৎসব চলছে।  অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে  গত এক মাসে অন্তত দশটি  বিশাল পাহাড় অবৈধ ভাবে  সাবাড় করে বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে। কতিপয় দুর্নীতিবাজ বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে  মাটি খেকো সিন্ডিকেট  ডাম্পার দিয়ে রাতের আধারে মাটি  পাচার করছে এমন অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীদের।

 সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উপজেলার ইনানী রেঞ্জের আওতাধীন জালিয়াপালং বনবিটের আওতায় জুম্মাপাড়া এলাকায় পাহাড় কর্তনে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। রাতে যেন ওই এলাকায় পাহাড়ের মাটি পাচারের মেলায় পরিণত হয় ।

 অভিযোগে প্রকাশ  জুম্মা পাড়ার  খাইরু,পারভেজ ,  মন্জু, মোক্তার, টুইক্যা,    নুরু  ও মীর কাসেমের নেতৃত্বে  একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রকাশ্যে পাহাড় কর্তনে জড়িত ।

 তাদের মালিকানাধীন রয়েছে অসংখ্য ডাম্পার। অভিযোগে প্রকাশ, জালিয়াপালং বিট কর্মকর্তা আরজু মিয়া,  বন প্রহরী ও  হেডম্যানদেরকে ম্যানেজ করে ফ্রিস্টাইলে পাহাড় সাবাড় করছে। স্থানীয়রা আরো জানান, রাত দশটার পর থেকে পরদিন ভোর ছটা পর্যন্ত  একটানা পাহাড় কর্তন চলে। একাধিক    ডাম্পার ভর্তি করে মাটি বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে।

 সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে,  উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান চৌধুরী ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাতের আধারে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মাটি ভর্তি ডাম্পার ও আটক ব্যক্তিদের কে জেল-জরিমানা করেছে।  কিন্তু  এরপর থামছে না পাহাড় কর্তন ও মাটি পাচার। বিশেষ  করে জালিয়া পালং  বিট কর্মকর্তা আরজু মিয়ার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাহাড় কর্তন এবং মাটি পাচারে জড়িত রয়েছে। প্রতি রাতেই তার পকেটে ঢুকে বিশাল অংকের টাকা।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, রত্না পালং ইউনিয়নের কোট বাজার ভালুকিয়া সড়ক এবং ইউসুফ আলী সড়কে ১১ কোটি টাকা উন্নয়ন কাজ শুরু  হয়েছে ।  উক্ত উন্নয়ন   প্রকল্পে বালুর পরিবর্তে এসব পাহাড়ি মাটি রাতের আধারে ব্যবহার করা হচ্ছে।

অভিযোগে প্রকাশ, ভালুকিয়া পালংয়ের এনাম   ভুট্টু ও সফি সিন্ডিকেট রাতের আধারে পাহাড়ি মাটি ডাম্পার যোগে  সরকারি উন্নয়নকাজে সরবরাহ করছে। জানতে চাইলে এনাম ও ভুট্টো সত্যতা স্বীকার করে বলেন ঠিকাদারের নিযুক্ত ম্যানেজারের সাথে কন্টাক করে তারা রাস্তায় পাহাড়ি মাটি সরবরাহ করেছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন জানান পাহাড় কর্তনের  খবর পেলেই আমরা অভিযান পরিচালনা  করে থাকি। ইতি মধ্যে  একাধিক  বার  অভিযান  সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে  মামলা দায়ের  করা হয়েছে।

সচেতন এলাকাবাসী জালিয়া পালংয়ের জুম্মাপাড়ায়  অতীতের  সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে পাহাড় কর্তনের দৃশ্য সরেজমিন পরিদর্শন ও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: